নভেল করোনা ভাইরাসের তা-বে বিপর্যস্ত পুরোবিশ্ব। এ ভাইরাস সবাইকে বন্দি করে রেখেছে চার দেয়ালের ভেতরে। বন্ধ রয়েছে সব ধরনের খেলা। ব্যাট-বল নিয়ে ২২ গজের পিচে যাদের সময় কাটত তারা এখন পার করছেন অস্বস্তিকর সময়। কদিন আগেই বাংলাদেশকে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ এনে দেওয়া অনূর্র্ধ্ব-১৯ ক্রিকেটারদের কাছে, এটাই জীবনের সবচেয়ে বাজে সময়। অধিনায়ক আকবর আলী, ব্যাটসম্যান মাহমুদুল হাসান জয় ও পেসার তানজীম হাসান সাকিব আমাদের সময়ের ক্রীড়া প্রতিবেদক সাইফুল ইসলাম রিয়াদের সঙ্গে মুঠোফোনে কোয়ারেন্টিনের দিনগুলো নিয়ে কথা বলেছেন।
আকবর আলী
সারাদিন টিভি দেখি। বাসায় গেম খেলে, মুভি বা হাইলাইটস দেখে সময় কাটাচ্ছি। এটা একটা হতাশাজনক সময় ভাই। মানে এ রকম তো কখনো ছিল না যে বাড়ি থেকেও বের হতে পারছি না। আগেও ছিল ১০-১২ দিনের ব্রেক কিন্তু বাড়ি থেকে বের হওয়া যাবে না এমনটা এবারই প্রথম হতাশারই বলতে হবে। এমন কোনো আশাও নেই যে কবে শুরু হবে, এক মাসও হতে পারে দুই মাসও হতে পারে। তাই এটা আরও বিরক্তিকর। ফিটনেস অনুশীলন যেগুলো বাসায় বসে করা যায় সেগুলো চেষ্টা করছি সপ্তাহে তিন চারদিন এগুলো মেনে চলার। পরিবারের সবার সঙ্গে যোগাযোগ, কথাবার্তা হচ্ছে এটা একদিক থেকে একটা সুযোগ হয়েছে বলা যায়। আমাদের এলাকায় হচ্ছে কী রংপুরের মেইন রোডগুলোতে কিছুটা মানুষজন কম কিন্তু অলি গলি বা বাজারে মানুষের ভিড় নাকি কমছে না। মানুষজন আড্ডা দিচ্ছে, মসজিদে আগের থেকে কমেছে লোকসমাগম কিন্তু পুরোপুরি বন্ধ হয়নি।
আজকেও প্রধানমন্ত্রী বলেছেন এপ্রিল মাসটা গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশের জন্য, আমিও সেটা মনে করি এ মাসটা আসলেই গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে যতটা সম্ভব স্বাস্থ্য সচেতনতা মেনে চলা, যেসব বলা হচ্ছে টিভিতে সেগুলো পালন করা এসব যেন সবাই পালন করে।
মাহমুদুল হাসান জয়
এই তো পরিবারের সঙ্গে সময় দিচ্ছি আর আমাদের রিচার্ড (ট্রেইনার) অনলাইনে এসে কিছু ড্রিল করায় এসব ওর সাথে করি। সপ্তাহে ৪ দিন, ও লাইভে আসে ইনস্টাতে আমরা দেখে ঘরে করি নিজে নিজে। টিভির খেলা দেখি, লাস্ট তিন দিন আমাদের কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনাল, ফাইনাল দেখিয়েছে ওগুলো দেখলাম (হাসি)।
ওই সময়টা মনে পড়লে নিজের কাছে অনেক ভালো লাগে কারণ পরশু দিন সেমিফাইনাল ম্যাচটা দেখলাম অনেক ভালো লাগল নিজের কাছে। এত লম্বা সময় কখনো ছিলাম না (খেলার বাইরে)। এবারই প্রথম। অনুভূতি বলতে ভালো লাগে না ঘরে বসে থাকা। ব্যাট-বল, মাঠে যাওয়া ছাড়া অস্বস্তিকর একটা ব্যাপার।
তানজিম হাসান সাকিব
আসলে অনেক ফ্রি সময় এখন, বেশির ভাগটাই পরিবারের সঙ্গে কাটছে। আর রিচার্ড একটা লাইভ সেশন করায় প্রত্যেক দিন এক ঘণ্টার মতো। ওর ফিটনেস সেশন করার পাশাপাশি নিজের কিছু কাজ আছে সেগুলো করি। সুইমিং করি প্রত্যেক দিন প্রচুর পরিমাণে।
আমি ২০ দিনের মতো বোলিং করিনি। এটা আসলেই বাজে বলব, একদম বাজে। ক্রিকেট ছাড়া তো আসলে শেষ তিন বছর আর কিছু ছিল না, এমন বিরতিও না। খারাপ লাগছে তবে কিছু করার নেই, কারও হাতেও নেই, এটা নিয়তি।
আসলে নিজে সচেতন না হলে দেশের মানুষের জন্য ঝুঁকি বাড়বে, নিজে ঝুঁকিতে পড়বে সঙ্গে পরিবারকেও। নিজেকেই সচেতন হতে হবে। আমরা যদি বাসায় থাকি তা হলে দেখা যাবে আরও ১০০০ জন নিরাপদ আমার কারণে। যেহেতু এটা ছোঁয়াচে রোগ।